করাপশনের
সিষ্টেম বাস্টার্ড পয়দা করে
বিবিএস- নিউজঃ গবেষণামূলক প্রতিবেদনঃ
বর্তমান প্রচলিত এই করাপশনের সিষ্টেম বাস্টার্ড পয়দা করে। “এই
করাপশনের সিষ্টেমকে ধ্বংস করে দিতে হবে”- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। লক্ষ্য
লক্ষ্য শহীদ, রক্তে ভেজা মাটি, সীমাহীন অপমান, মাত্রহীন যন্ত্রনার মধ্য দিয়ে স্বাধীন
বাংলাদেশ হিসেবে আমাদের বিজয়ের ৪৮ বছর পার হয়ে গেছে। আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশের
মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের কথা মনে হলেই আমাদের সকল অস্থিত্বকে জাগিযে আমাদেরকে
স্মরণ করি দেয় বাঙ্গালী জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি,
বীর মুক্তি সেনাদের চাওয়া পাওয়া এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সুষ্পষ্ট লক্ষ্য উদ্দেশগুলোর
কথা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি, বীর মুক্তি সেনাদের চাওয়া
পাওয়া এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের লক্ষ্য উদ্দেশ্যগুলো ছিল এবং হল; রাজনৈতিক মুক্তি,
অর্থনৈতিক মুক্তি, সম্পদের সুসম বন্টন, ধনী-গরিবের মধ্যকার বৈষম্য কমিয়ে একটি সমতার
অর্থনৈতক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।
দেশ প্রেমিক আদর্শবান মানুষ হওয়ার শিক্ষা, ন্যায় বিচার ও সম অধিকার প্রতিষ্ঠার
রাজনীতি ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এই লক্ষ্য পুরনে আপনার ভূমিকা কি? এবং এই প্রত্যাশা পুরনে
দেশ ও জাতি কতটুকু সফল? চরম বাস্তবতা হল স্বাধীনতার ৪৮ বছরে আজ দেশে ধনী-গরিবের মধ্যকার
বৈষম্য অতি আশঙ্কাজনকভাবে চরমে। ধনী গরিবের এই বৈষম্য আমাদের স্বাধীনতার সকল চাওয়া
পাওয়াকে ধ্বংস করে দিয়েছে। একটি দেশের নাগরিকদের যথন অর্থনৈতিক সুসম অবস্থান থাকে না
তখন অন্য সকল কিছুই ধ্বংস হতে বাধ্য। তাই বর্তমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আমাদের স্বধীনতার
লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যকে পুরন না করে দেশের কিছু অসৎ ও অন্যায়কারীকে সম্পাদশালী করছে।
তাই আমাদের এই বৈষম্য থেকে মুক্তির দরকার।
তাই বিবিএস প্রধান সমন্বয়ক এবং ডেইলী গ্লোবাল নিউজ এডিটরের নেতৃত্বে পরিচালিত
একটি গবেষণামূলক এই প্রতিবেদনটিতে আমরা জানতে চেয়েছিলাম, জানাতে চাই এবং জানতে চাইবো
স্বাধীনতার ৪৮ বছরে দেশের জন্যে আপনি কি দিয়েছেন? কি পেয়েছেন? কি পাচ্ছেন? মাঠ পর্যায়ে
এই গবেষণামূলক সুকঠিন কাজটি চালাতে গিয়ে আমরা দেখেছি কিছু দেশ প্রেমহীন অযোগ্য অদক্ষ
লোক বসে আছে সরকার এবং প্রশাসনিক কাঠামোর বিভিন্ন স্তরে। লক্ষ্য শহীদের জীবন দিয়ে
অর্জিত এই দেশের সার্বিক উন্নয়নের চিন্তা এবং দেশপ্রেমে যাদের গাঁ জ্বলে ওঠে এবং বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া প্রতিশ্রুতি, বীর মুক্তি সেনাদের চাওয়া পাওয়া এবং মহান বিজয়
দিবস এবং মহান বিজয় ও স্বাধীনতা যুদ্ধের লক্ষ্য উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়নের কাজে যারা
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল, করছে এবং করবে তারাই হল দেশের ব্লাডি বাস্টার্ড, রাজাকার,
আলবদর, সুনাফেক।
এই প্রতিবেদনটিতে আমরা বাস্তবে প্রমাণ করে দেখিয়েছি দেশের সকল সুযোগ সুবিধাকে
অপব্যবহার করে ব্যক্তিকেন্দ্রীক চাওয়া পাওয়া পুরন করার জন্যে ঐ এবং এই সমস্ত ব্লাডি
বাস্টার্ডগুলো কিভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রমহানের দেওয়া প্রতিশ্রুতি,
বীর শহীদ ও সেনাদের সুমহান স্বাধীনতার চাওয়া পাওয়া এবং লক্ষ্য উদ্দেশ্যগুলোকে কিভাবে
প্রতিনিয়ত পদদলিত করে যাচ্ছে। তবে আমাদের আশার বিষয় বর্তমান কুলষিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা
থেকে শান্তি ও মুক্তির একটি বিধি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি জন্যে সকল প্রতিকূলতার
বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কাজ করছেন গণপ্রাজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অগ্নিশপথ পুষ্ট আদর্শে গড়া জননেত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের
রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে একটি নতুন মাত্রার যাত্রা শুরু
হয়েছে।
বিগত দিনে যারা বিভিন্ন ষঢ়যন্ত্র ও হত্যার রাজনীতি করে গণপ্রাজাতন্ত্রী বাংলাদেশের
ক্ষমতায় ছিল তারা তাদের সময়কার ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনীতিকে আরো নীতিহীন করে দিয়ে,
প্রশাসনিক ও থানাপুলিশের কর্মকর্তাদের অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। দেশের দেশপ্রেমিক
জনতার রাজনৈতিক সচেতনতা ধ্বংস করার জন্য তাদের যত জ্ঞান, বুদ্ধি, সম্পাদ ও ক্ষমতা ছিল
তা তারা অবব্যবহার করেছে বিগত অনেক বছরধরে। ফলে বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের অধিকার ও দায়িত্ববোধ
সম্পর্কে এতটাই গাফেল হয়ে পরেছে যে তাদের মুক্তির চেতনা বলতে কিছুই নেই। তারা বিভিন্ন
অন্যায়ের প্রতিবাদের পরিবর্তে উক্ত অন্যায় কাজে জড়িয়ে পরছে ঘৃণ্য পশুর মত। দেশের জনগণ
এখন মেরুদন্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহারকারী দুর্নীতিবাজ প্রশাসনিক
কর্মকর্তা কর্মচারীদের নাম এবং কর্মকান্ডের কথা শুনলেই তারা ভয়ে বুবা হয়ে যায়।
অন্যায়ের প্রতবাদ যেটি মানুষের মানুষ হিসেবে টিকে থাকার প্রথম ও প্রধান বাধ্যতামূলক
দায়িত্ব ও কর্তব্য সেটি থেকে তারা সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকার পথে হাটা ধরেছে। গণতন্ত্র,
অধিকার ও সুসম গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা আজ বিশ্বের সর্বত্র।গণতন্ত্র
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উত্তম এবং একটি অনুকরনীয় ও অনুসরনীয় সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা
বা মতবাদ হলেও এই ব্যবস্থার মধ্যে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রে একটি শোষণহীন, সমধিকার,
সুসম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে
না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সর্বোচ্চ বিকাশে দেখা গেছে এটি হল ধনী ও গরিবের বৈষম্য সৃষ্টিকারী
একটি ব্যবস্থা। গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সমাজের সাধারণ মানুষকে শোষণ থেকে
রক্ষা না করে বরং এই বৈষম্যকে আরো রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আসকারা ও স্বীকৃতি
দিয়ে থাকে। তাই মানব জাতিকে এই অমানবিক ব্যবস্থা থেকে মুক্তির পথ খুজে বের করতে হবে।
এবং আজ এই মুক্তির পথ বা শান্তি ও সুসম ব্যবস্থা নির্মাণের জন্য একটি টেকসই ববস্থা
প্রতিষ্ঠা করা গোটা বিশ্বের চাহিদা।
বিশ্বর সকল রাষ্ট্রই আজ এই অমানবিক বৈষম্য থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা খুজাখুজি
করছে। গণতন্ত্র ছাড়াও অন্যান্য যে সকল তন্ত্র রয়েছে যেন রাজতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র, দলীয়তন্ত্র,
পরিবারতন্ত্র সহ যে সকর তন্ত্র আছে এই সমস্ত
তন্ত্রের মাধ্যমে সমাজে ও ব্যক্তি জীবনে শান্তি ও সুসম একটি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা
সম্ভব হচ্ছে না এবং এই সমস্ত ব্যবস্থায় আদৌ কি সমাজ ও ব্যক্তি জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা
করা সম্ভব? সুসম, শোষণহীন এবং বৈষম্যহীন একটি সমাজ ব্যবস্থা কি নির্মাণ করা সম্ভব?
এই প্রশ্ন আজ গোটা বিশ্বজুড়ে। নির্বাচনের নামে জনগণের ভোটের মাধ্যমে জন রায়ের কারসাজি
ও ভাওতায় ক্ষমতা দখলের বৈধতা এবং পালা পরিবর্তন ও তার মোকাবেলা- মানব সভ্যতার বিকাশের
ধারাবাহিকতায় গণতন্ত্রের যাত্রার সূচনা হয়েছে মানব সভ্যতার জ্ঞানের একটি বিশেষ স্তরে।
এই গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা বাস্তবে প্রয়োগ করতে গিয়ে অনেক লড়াই সংগ্রাম
ও যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে।
মানব সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে যারা একটি সর্বজনীন পন্থায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার
দিক নির্দেশনা দিছেন তারা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থের কথা চিন্তা করে বলেছেন- “গণতন্ত্র
হল জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্যে এবং জনগণের শাসন ব্যবস্থা।” এখানে এই ব্যবস্থাকে নবায়ন
এবং বিকাশের জন্যে আমাদের মনে রাখার দরকার ছিল যিনি বা যারা এই মতবাদটি দিয়েছিলেন এবং
এর মাধ্যমে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মঙ্গলে নিয়োজিত ছিলেন তাকে বা তাদেরকে ছাড়া এই
মতবাদ এবং ব্যবস্থার কোনো অস্থিত্ব নেই। তাই এই ব্যবস্থাটির আপগ্রেড কার্যকর করতে হলে
এমন আদর্শবান ন্যায়ের ধারক একজন ন্যায়বান নেতা বাধ্যতামূলক প্রথম। কিন্তু যেই ন্যায়বান
নেতৃত্বের বলিষ্ঠতায় এই ভাবনাটুকু এসেছিল সমাজ ব্যবস্থায় বর্তমান গণতান্ত্রিক মাজ ব্যবস্থায়
তাকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন এবং বিকশিত না করে বরং তাকে বিকৃত করা হয়েছে। কারণ এই কথাটি
ঘোষিত হয়েছিল যেই নেতৃত্বের মাধ্যমে গণতন্ত্র বা কোনো সুসম ব্যবস্থার মূল ধারকই হল
সেই নেতৃত্বের মধ্যে।
আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের বাস্তবতায় আমাদের সেই যোগ্য নেতৃত্বকে ষঢ়যন্ত্রকারী
সেই মুনাফেক, ব্লাডি বাস্টার্ডগুলো সপরিবারে হত্যা এবং অস্বীকার করেই গণতান্ত্রিক এই
ভাবনাকে বিকশিত না করে তা থেকে ন্যায়বান নেতৃত্বের অপশনটিকে অস্বীকার বা গুরুত্বহীন
কর্ রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্রহীনতাকে চর্চা করেছে গণতন্ত্রের নামে এবং সমাজ, দেশ ও
বিশ্বে ধনী গরিবের বৈষম্যকে পাহাড় পরিমান করে একট অমানবকি সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করেছে।
এই ব্যবস্থার প্রধান এবং প্রথম শর্তই হল ন্যায়ের ধারক যোগ্য নেতৃত্ব। আমাদের সেই ন্যায়ের
ধারক যোগ্য নেতৃত্ব ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এখন গোটা বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহ এই যোগ্য নেতৃত্বের সংকটে পরে গণতান্ত্রিক ববস্থাকে
বিকশিত না করে তাকে পারিবারিক ও দলীয়করণ করে গণতন্ত্রকে বিকৃত করে ফেলেছে এবং বিশ্বটাকে
পরিণত করেছে একটি অশান্তির স্থান হিসেবে। যাইহোক এখন জ্ঞান বিকাশের বর্তমান এই বিশ্ব
যখন প্রবেশ করেছে ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েভের বলয়ে এক বিশ্বের একটি সমাজ ও বিশ্বব্যবস্থায়
তাই এখন আর সেই গতানুগতিক ব্যবস্থার গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের
মাধ্যমে পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং বহাল রাখার কোনো সুযোগ আর নেই। কারণ ওয়াল্ড
ওয়াইড ওয়েভ গোটা পৃথিবীটাকেই একটি সমাজ বা দেশ হিসেবে আইডেনডিফাই বা সনাক্ত করে থাকে।
তাই এই একক ওয়েভের বলয়ে রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিলিন বা ধ্বংস হতে বাধ্য। তাই এখন বিশ্বের
কোনো একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় চলবে আবার অন্য কোনো রাষ্ট্র ব্যবস্থা
পরিবার তান্ত্রিক, কোনোটা দলীয় তান্ত্রিক এবং অন্য কোনো রাষ্ট্র অন্য কোনো তান্ত্রিক
বা ব্যবস্থায় চলবে সত্যিকার অর্থে এখন তার আর কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে বিলিন
করে দিয়েই একক ওয়েভ বা নেট বিশ্বটাকে গঠিত করবে একটি সমাজ ব্যবস্থায় বা একটি দেশীয়
বা এক দেশ ব্যবস্থায়। এখন যারা এই একক নেটকে অস্বীকার করবে বা একক ওয়েভের বাহিরে গিয়ে
নিজেদের মনগড়া মত কোনো রাষ্ট্র বা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালিত করতে চেষ্টা করবে তারা
সহ তাদের গোটা ব্যবস্থাই ধ্বংরে মধ্যে পতিত হবে। এখন চলছে ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েভ নিয়ন্ত্রিত
বিশ্বায়ন ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় ক্ষমতা ধারণ এবং বহনের প্রধান ও প্রথম উদ্দেশ্য হতে
হবে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ন্যায় প্রতিষ্ঠা।
আর আমাদের গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ক্ষমতা ধারণ এবং বহনের একটি মাধ্যম হল
নির্বাচন বা জনরায় আর অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হল সর্বাত্মক যুদ্ধে জাপিয়ে পরে অন্যায়ের
অবসান ঘটাতে ঘটাতে ন্যায়ের প্লাটফর্ম তৈরি করার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা ধারন এবং বহন। আমাদের
প্রচলিত গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় আমরা যদি জণগণের মতামত বা জনরায়ের মাধ্যমে ক্ষমতার
পালাবদল ঘটাতে চাই তাহলে সেই ক্ষমতা দ্বারা কি দেশ ও সমাজ ব্যবস্থায় ন্যায় প্রতিষ্ঠা
করা সম্ভব? জনগণ কি ন্যায় কি জিনিস তা বুঝে? বা বুঝার এবং তা প্রয়োগ ও কার্যকর করার
যোগ্যতা রাখে? জনগণ যদি ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতো তাহলে কি সমাজে অন্যায় অত্যাচার
হওয়ার কোনো সুযোগ থাকতো? জনগণের রায়ে যদি কেই ক্ষমতা প্রাপ্ত হয় তাহলে উক্ত ক্ষমতার
উৎস বা মালিক হয়ে যায় জনগন, কিন্তু বাস্তবতা কি? ক্ষমতার মালিক কে? ক্ষমতার উৎস কে
বা কি? আমরা যদি সৃষ্টিকর্তা ছাড়া অন্য কাউকে ক্ষমতার উৎস বা মালিক হিসেবে মেনে নেই
তাহলে কি সেটা সঠিক হবে? এবং সেই ক্ষমতা দিয়ে আমরা কি করব? আমাদের কি এমন ক্ষমতার দরকার
যেই ক্ষমতার মালিক বা উৎস সৃষ্টিকর্তা নয়? তাহলে সেই ক্ষমতাতো ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কোনো
রকম ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে না? তাহলে কি সেটা অন্যায় করার ক্ষমতা হয়ে যায় না? আর যদি
ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষতা না হয় তাহলেতো সেই ক্ষমতার মাধ্যমে দেশ ও সমাজে অন্যায় প্রতিষ্ঠিত
হবে। তার মানে জনরায়ের মাধ্যমে আমরা কি এমন ক্ষমতা চাই যেই ক্ষমতা দিয়ে আমরা সৃষ্টিকর্তার
সাথে যুদ্ধ ডিক্লার করব?
তাই এখন আমাদের এই বিষয়টি সুষ্পষ্ট করতে হবে- ক্ষমতা কেন দরকার? ক্ষমতার উৎস
বা মালিক কে? এই বিষয়ের সুষ্পষ্ট উত্তর যাদের জানা নেই তারা কোনো ক্ষমতারই যোগ্য নয়।
একজন মানুষ ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত হলে সে হয় মুক্তিপ্রাপ্ত। দেশ ও সমাজে মানুষ কি
ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত? মানুষ কি মুক্তিপ্রাপ্ত? যদি ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত হত তাহলে
মানুষের দুঃখ দূর্দশা থাকার কথা নয়, কারণ মুক্তিপ্রাপ্ত মানুষ হয় স্বাধীন, তারা থাকে
শান্তির একটি ব্যবস্থায়। মানুষ ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত নায় বলেই মানুষ হল পরাধীন, অন্যের
অধীন, দাস বা ন্যায় থেকে বিচ্যুত। যে মানুষ নিজেই পরাধীন, দাস বা অন্যায়ের অধীন সেই
মানুষ ন্যায় প্রতিষ্ঠায় তার রায় সে কিভাবে প্রদান করতে সক্ষম? এটি কি একটি ভুল বা অন্যায়
পদ্ধতি নয়? একটি ভূল বা অন্যায় পদ্ধতির মাধ্যমে কি ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? অন্যায়ের
কি ন্যায়ের উপর কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা আছে? কি মনে হয়? বাস্তবতা কি?
যে বা যারা অন্যায়ে জরজড়িত, নিমজ্জিত বা হাবুডাবু খাচ্ছে তার বা তাদের কাছে
আমরা কি ন্যায়ের সমর্থন আশা করতে পারি? যেমন- একজন ডাক্তার তার কাজ হল রোগীদেরকে চিকিৎসা
করে তাদের রোগ সে সারিয়ে তুলবে। আর ডাক্তার হতে গেলে তাকে ডাক্তারী জ্ঞান অর্জন করে
থিউরী ও প্র্যাকটিকেলে পাস করে তবেই ডাক্তার হতে হয়। নাকি রোগীগণ তাদের রগ্নতা দিয়ে
একজনকে ডাক্তারী সার্টিফিকেট দিয়ে ডাক্তার বানিয়ে ফেলে? কোনটি বাস্তব? যদি তাই বাস্তব
হয় তাহলে এই ক্ষেত্রেও এটি আরো বেশি পরিমান বাস্তব যে, জনগণের পক্ষে ন্যায় প্রতিষ্ঠার
যে নেতা তা রায় দিয়ে বানানো সম্ভব নয়। বরং যিনি নেতা তিনি অবশ্যই ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত
হবেন অর্থাৎ ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত না হলে নেতা হওয়ার যোগ্যতাই নাই। সিটার বাটপার
হতে পারেন। লোভী, অন্যায়কারীদের সমর্থন, ভীতুদের সমর্থন ইত্যাদি সমর্থন দিয়ে তিনি লোভীদের
নেতা মানে তুলনামূলক বড় লোভী, অন্যায়কারীদের নেতা মানে তুলনামূলক বড় অন্যায়কারী, তুলনামূলক
বড় ভীতু ইত্যাদি হতে পারেন।
কিন্তু ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই তিনি মুক্তি সেনা হবেন। তিনি জনগণের
ঘুমন্ত ন্যায়বোধকে জাগিয়ে তুলবেন, তাকে সুস্থ্য করবেন, অন্যায় থেকে বিরত করাবেন, ক্ষতি
থেকে ফেরাতে যা যা করার দরকার লাগে তা করে তাকে ন্যায়ের প্লাটফর্মে নিয়ে আসবেন। আমাদের
অবশ্যই মনে রাখতে হবে অন্যায়ের সাথে ন্যায়ের সম্পর্কটাই সাংঘর্ষিক। যদিও ন্যায়ের সাথে
অন্যায়ের কোনো তুলনা চলেনা, তারপরও তো সমাজে অন্যায়ের কারণে অশান্তি বিরাজ করছে কারণ
মানুষ দেশ ও সমাজে ন্যায় থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এখন দেশ ও সমাজের ন্যায় থেকে বিচ্যুত
মানুষগুলোর পক্ষে কি ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার কোনো সুযোগ বা সামর্থ্য আছে? ন্যায় প্রতিষ্ঠার
জন্য দরকার হল যোগ্য নেতৃত্বের, যুগের উপযোগি ব্যবস্থা নির্মানে সক্ষম নেতার, দরকার
মুক্তিসেনার। তাই মুক্তিসেনাদের নেতৃত্বে দেশ ও সমাজ থেকে অন্যায়কে ধ্বংস করেই ন্যায়
প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের রায়ের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠার
কোনো প্রচেষ্টাই কোনো কাজে আসবেনা এবং তা হবারও নয় বরং মুক্তিসেনা হয়ে সৃষ্টিকর্তার
নির্দেশিত ন্যায়ের ধারক এবং বাহক হয়ে জনগণকে সেল্টার দিয়ে, ট্রিটমেন্ট দিয়ে, পথ দেখিয়ে,
ঐক্যবদ্ধ করে, আনুগত্যের অবস্থানে নিয়ে এসে, এমনকি বাধ্য করে তার মধ্যে ন্যায়ের শক্তি
জাগিয়ে দিয়ে দেশ ও সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষমতা ধারন এবং বহন করে
সাম্যের সমাজ ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যেতেই হবে যতক্ষণ না দেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত না হয়।
জনগণ বা কারো কাছে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য রায় বা ভোট চাওয়ার অর্থটাই এমন নয় কি যে,
তারা এখনও নিজেদেরকে ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে অক্ষম? ন্যায়ের কথা বলে এতদিন যারা
বিভিন্নভাবে অন্যায় করেছে এখন তাদের বিচার কার্যকর করতে হবে। মুক্তিসেনাদের নেতৃত্বে
সবাইকে সংগঠিত হয়ে এবং সংঘবদ্ধভাবেই তাদের বিচার কার্যকর করে দেশ ও সমাজ থেকে অন্যায়কে
ধ্বংস করার মধ্যেই রয়েছে ক্ষমতা এবং শুধু রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতাই নয়, রয়েছে জগতের
মহাশক্তিরও সন্ধান।
এখন বাংলাদেশ নয় শুধু বিশ্বের বাস্তবতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের রাজনীতিতে এক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে মানুষের সমতার
সত্যিকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মধ্য দিয়ে একটি ন্যায়তন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশ্বায়ন উপযোগি
একটি বিধি ব্যবস্থা নির্মানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এবং নেতৃত্ব দেওয়ার অফুরন্ত সুযোগ
আমাদের রয়েছে। দেশ ও সমাজে ন্যায়তন্ত্র প্রতিষ্ঠার
ধাপ বা প্রক্রিয়া ন্যায় প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে অন্যায় ধ্বংস হয়ে যাবে অথবা অন্যায়কে
ধ্বংস করেই ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবে বাস্তবে অন্যায়কে টার্গেট করে আমাদের কোনো
লাভ নাই। কারণ অন্যায়কারী ছাড়া বা অন্যায়কারীকে বাদ দিয়ে অন্যায়ের কোনো অস্থিত্ব নেই
বা খোঁজে পাওয়া যাবে না। তাই আমাদের টার্গেট হতে হবে অন্যায়কারী, অন্যায় নয়। এই জন্য
অন্যায়কারীকে রেঞ্জের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। অন্যায়কারীর কাছ থেকে দূরে থাকলে তাকে টার্গেটের
মধ্যে নিয়ে আসা যাবে না।
কোনো কিছুকে ধ্বংস বা আঘাত করতে হলে তাকে টার্গেটের মধ্যে বা রেঞ্জের মধ্যে
নিয়ে এসে বা তার ভিতরে ডুকেই তাকে যথাযথ পন্থায় হিট করে ধ্বংস করতে হবে এমনকি অন্যায়কারী
যদি লুকিয়ে যেতে চাই বা পালিয়ে যেতে চাই তাহলে তাকে খোঁজে বের করেই ধ্বংস করতে হবে।
অন্যায়কারী যে বা যারাই হোক এবং যত বড় অন্যায়কারীই হোক তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা বা
সীমাবদ্ধতা হল তারা লোভ, হিংসা, ঘৃণা, মায়া ইত্যাদির উর্ধ্বে ওঠে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং
ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো শক্তি নেই বা রাখে না। আর ন্যায় সর্বদায়ই একতার বন্ধনে সক্রিয়।
অন্যায়কারীর শক্তির উৎস হল ন্যায়ের মুখশ বা ন্যায়ের ছলনা । তাই অন্যায়কারীর মূলে কোনো
শক্তিই নেই পুরাটাই হল ছলনা। সত্যিকার ন্যায়ের ধারক এবং বাহক যারা তাদের আতংকে অন্যায়ের
ধারক এবং বাহক যারা আছে তারা সব সময় আতংকগ্র্স্ত হয়ে থাকে। তাই অন্যায়কারীকে ধ্বংস
করেই ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যায়কারীদের মাধ্যমে বা তাদের কাছ থেকে ন্যায় বিচার,
ন্যায় আচরণ, ন্যায় পদ্ধতি এই সমস্ত যারা আশা করে তারা আসলে ন্যায় কি? নেতা কি? আর মুক্তি
সেনা কি? তা বুঝেই না। সুজা কথা আমাদের যে গতানুগতিক ব্যবস্থা বা ধর্ম আছে এই ব্যবস্থা
বা ধর্ম আমাদের বদলাতে হবে। প্রচলিত ধর্ম বা ব্যবস্থা সমাজ ও দেশের জনগণকে শান্তি দিতে
অক্ষম। তাই এই ধর্ম বা ব্যবস্থাকে যারা আকড়ে ধরে আছে এবং এইগুলোর অপব্যবহার করছে তারাই
হল অন্যায়কারী। এই সমস্ত অন্যায়কারীদেরকে ধ্বংস করেই যুগের উপযোগি যথাযথ শন্তির ধর্ম
বা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই এখন প্রথম কাজ এবং সবচেয়ে প্রধান কাজ। এটাই রাজনীতির প্রথম
এবং প্রধান কাজ এবং পাশাপাশি ধর্মেরও প্রথম এবং প্রধান কাজ। এই কাজ শুধু বাংলাদেশের
নয় গোটা বিশ্বের প্রেক্ষাপটের জন্যেই একান্তভাবে প্রযোজ্য। ন্যায় ভিত্তিক বা সাম্যের
সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার যাত্রা শুরু করতে হলে প্রচলিত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সমাজ
ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় এক মহা সংঘাত বাধ্যতামূলক। কারণ বড় রকমের সংঘাত ছাড়া রাজনীতি
সহ অন্যান্য ব্যবস্থার মধ্যে যে বৈষম্য ও অন্যায়ের জন্ম হয়েছে তা ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
বর্তমান পৃথিবী দুইটা সংঘাতের সম্মুখীন হয়েছে। একটি সংঘাত হল পৃথিবীতে ন্যায়তন্ত্র
বা ন্যায় ভিত্তিক সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংঘাত আর অপরটি হল পৃথিবী ধ্বংসের
সংঘাত। প্রথম সংঘাতটি সফল না হলে দ্বিতীয় সংঘাতটি সংগঠিত হবে।
জ্ঞান হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ। পৃথিবীতে মানুষের যাত্রার শুরুর পর থেকে
আজ পর্যন্ত এই গ্রহটি যত জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছে এই জ্ঞানই এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ।
অর্জিত এই জ্ঞানের মাধ্যমে পৃথিবীতে ন্যায় ভিত্তিক সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা
করা সম্ভব, আবার ন্যায়তন্ত্র বা ন্যায় ভিত্তিক সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না
হলে প্রাপ্ত এই জ্ঞান দ্বারাই পৃথিবীকে ধ্বংস করাও সম্ভব বা হয়ে যাবে। তাই একটি না
ঘটাতে পারলে অপরটি ঘটবেই এটা নিশ্চিত। জ্ঞানের বিকাশের ধারাবাহিকতায় বর্তমান পৃথিবী
“ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েভ” এর মধ্যে প্রবেশ করেছে। বিশ্বব্যাপী এখন চলছে এই ওয়াল্ড ওয়াইড
ওয়েভকে নিজেদের মত করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় মানুষ
ওয়েভকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে নিজেদের শক্তি দ্বারা নিজেরা অমর ও মহা শক্তিধর হয়ে যেতে।
কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তা সম্পূর্ণ একটি অসম্ভব ব্যাপার ফলে যা হবে এই ওয়েভ বিষ্ফোরিত
হবে অর্থাৎ এই ওয়েভ পৃথিবীকে বিষ্ফোরিত করে দিয়ে তার মহাজাগতিক সক্রিয়তাকে অটুট রেখেই
বজায় থাকবে যদি ওয়েভের ধর্ম বা নিয়ম অনুসারে ন্যায় ভিত্তিক সাম্যের সমাজ ব্যবস্থায়
মানুষ নিজেদের চলার ধর্ম বা ব্যবস্থা তৈরি করতে না পারে। তাই সংঘাত অনিবার্য। এখন শুধু
বাংলাদেশ নয় বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই এই সমস্যার সমাধানটি গোজামিলের মাধ্যমে
দেওয়া হচ্ছে বা করা হচ্ছে। যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সময় আমাদের মনে রাখতে হবে শুধু অতীত
নীতিমালা দিয়ে এখন আর কোনো সমস্যার সমাধান খুঁজে এর পূর্ণাঙ্গ সমাধান পাওয়া যাবে না।
তাতে সমস্যা বাড়তেই থাকবে। এখন আমরা বসবাস করছি একুশ শতকে যার শুরুটা হয়েছে ডিজিটাল
প্লাটফর্ম দিয়ে। এই প্লাটফর্ম থেকেই আমাদের কাজের শুরুটা করতে হবে। আমি আমার দেশের
জন্য একটি ব্যবস্থা বানিয়ে নিলাম যা আমার দেশকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবে এই রকম সুযোগ
এখন আর নেই, এটি সম্ভবও না। কারণ ডিজিটাল প্লাটফর্মটাই হল একটি ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েভ বা
একক নেটওয়ার্ক। এখন ব্যবস্থা নির্মাণের ক্ষেত্রে দেশ বলতে পুরো পৃথিবীটাকেই বুঝতে হবে।
কারণ বাংলাদেশ এখন একটি দেশ হিসেবে আমরা যদি একটি সীমত ঘন্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকি
তাহলে বিভিন্ন নীতি আদর্শ ও নীতিমালার ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নতা এবং সীমাবদ্ধতাই থেকে যাবে
কিন্তু ডিজিটাল প্লাটফর্ম এর ক্ষেত্রে এই রকম কোনো স্থান বা রাষ্ট্রে তার গতি প্রকৃতির
উপর বিচ্ছিন্নতা বা বাঁধা সৃষ্টি করে রাখা সম্ভব নয় এবং যদি তা করা হয় তাহলে তা নানামূখী
সংকট সৃষ্টি করবে এবং যে কোনো বিষ্ফোরনের মাধ্যমে এই ডিজিটাল প্লাটফর্ম বা একক নেট
সেই সংকটকে ধ্বংস করে দিবে।
প্রচলিত সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আমাদের যারা নীতি নির্ধারক ছিলেন এবং আছেন
তারা তাদের চিন্তাভাবনায় বিরাট ও মৌলিক একটি ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছিলেন এবং হচ্ছেন
আর সেটি হল তারা চেষ্টা করছে ডিজিটাল প্লটফর্মটাকে নিজেরা ডিজিটালাইজড করণের মাধ্যমে
এটিকে নিয়ন্ত্রণের একটি ব্যবস্থা তৈরি করে দেশ ও রাষ্ট্রকে পরিচালনা করতে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে
তা হল একটি অসম্ভব ব্যাপার। ডিজিটাল প্লাটফর্মটা হল একটি শ্বাশত ধারা। এই ধারায় গোটা
পৃথিবীটাই একটি নেটে বাঁধা। এখানে পৃথিবী রাষ্টীয় সীমাবদ্ধতার গন্ডিকে সে ধ্বংস করে
দিয়েই তার নিজস্ব বলয় বা প্রভাবে বিকশিত হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। ডিজিটাল প্লাটফর্মকে
নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের সাধ্যের বাহিরে- তবে মানুষের যা করার আছে সেটি হল নিজেদেরকে
ডিজিটাল প্লাটফর্মের উপযোগি করে নিজেদেরকে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও যোগ্য করে নেওয়া। অর্থাৎ
ডিজিটাল প্লাটফর্মকে নিয়ন্ত্রণ নয় বরং ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে সৃষ্ট একক নেট দ্বারা
নিয়ন্ত্রিত হওয়া ছাড়া গতি নেই। ডিজিটাল প্লাটফর্ম বা একক নেটকে যে বা যারা যতই নিয়ন্ত্রণের
চেষ্টা করবে সে বা তারা ততই নানাবিধ সংকট, বিপদ ও ধ্বংসের মধ্যে পতিত হবে। তাই ন্যায়
ভিত্তিক একটি সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণ ছাড়া পৃথিবীকে ঠিকিয়ে রাখার আর কোনো বিকল্প
নেই। ন্যায় ভিত্তিক একটি সাম্যের সমাজ ব্যবস্থার জন্য দরকার বিশ্বায়ন উপযোগি যোগ্য
নেতৃত্বের।
আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের যে মানব সম্পদ রয়েছে তাদেরকে ডিজিটাল প্লাটফর্ম তথা
ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েভ উপযোগি যোগ্য, দক্ষ করার মধ্য দিয়েই বিশ্বায়ন উপযোগি সত্য ও সাম্যের
ন্যায়তন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ গ্রাম বাংলা নিয়ে গঠিত। এই দেশের
অধিকাংশ মানুষের বসবাস হল গ্রাম এলাকায় এবং গ্রামের মানুষ নানামূখী শোষণ, জুলুম, হয়রানী,
অন্যায়, অবিচার এবং ষঢ়যন্ত্রের মাধ্যমে অবহেলীত একটি অবস্থায় কতিপয় সুবিধাভোগী টাওট
বাটপারদের হাতে জিম্মি হয়ে রয়েছে। আর তাদের এই স্বাধীনতা বিরোধী কুকাজের মদদ দিয়ে যাচ্ছে
এই দেশেরই জন সম্পত্তি দিয়ে লালিত পালিত কতিপয় অযোগ্য, অদক্ষ, দেশপ্রেমহীন প্রজাতন্ত্রের
কর্মচারী। তাদের এহেন তৎপরতা আসলেই দেশের সৃজনশীল বিকাশের জন্য অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে।
তবে আশার বিষয় বর্তামন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সৎ সাহস এবং সকল
অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লাড়াই করার দৃঢ়তার মাঝে আমরা বিশ্বায়ন উপযোগি একটি ন্যায় ভিত্তিক
সমাজ ও বিশ্ব কাঠামো গড়ার দিকে সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার যথেষ্ট ইতিবাচক ধারার সম্ভাবনা
দেখতে পাচ্ছি। এবং সেই ধারার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই প্রচলিত রাজনৈতিক কুলষতা থেকে
মুক্ত হয়ে একটি শোষণ মুক্ত সাম্য ও ন্যায় ভিত্তিক সরকার কাঠামোই ছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা
ও বিজয়ের সঠিক গতি পথ।
